সিনেমাটা সিনেমাই থাকে, বাস্তব বড়ো কঠিন। আত্মহত্যা করলেন অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত।মাত্র ৩৪ বছর বয়সে

       সিনেমাটা সিনেমাই থাকে, বাস্তব বড়ো কঠিন।

 আত্মহত্যা করলেন অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত।মাত্র ৩৪ বছর বয়সে।এই তো শেষ সিনেমা ছিছোরে তে বোঝাতে চেয়েছিলেন আত্মহত্যা কোনো সমাধান না। লড়তে হবে, ফেস করতে হবে। হোস্টেল লাইফের লড়াইকে নিয়ে দিয়েছিলেন জিতে যাওয়ার বার্তা। কিন্তু সেই বার্তা নিজের কাছেই পৌঁছলো না। হেরে গেলেন তিনি। ধোনির মতো লড়াকু ক্রিকেটারের চরিত্রাভিনেতা ম্যাচ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। আসলে রিল লাইফ আর রিয়েল লাইফের অনেক তফাৎ।হিরো আর হেরো ইংরাজিতে একই বানান। দেখিয়ে দিলেন।

কি ছিলো? ভেঙে যাওয়া প্রেম,কাজ না পাওয়ার হতাশা, লক ডাউনের ডিপ্রেশন? তাতে এই ভাবে চলে যেতে হবে! আমি তাঁর অভিনয়ের ভক্ত ছিলাম। কিন্তু শেষটা হতাশ হলাম। এই মৃত্যু কাঙ্ক্ষিত না। সারা দেশ,সারা পৃথিবী লড়ছে পরিস্থিতির সাথে। লড়তে দেখলাম ইরফান খানকে। মৃত্যুকে পকেটে নিয়ে অভিনয় করলেন। মরার আগে বেঁচে নিলেন। তাঁর ইন্ডাস্ট্রিতেই সোনালী বেন্দ্রে, মনীষা কৈরালা লড়ছেন। স্টিফেন হকিং শুধু হুইল চেয়ারে বসে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে আকাশ ছোঁয়া যায়। আসল হিরো তারাই, যাঁরা ক্যান্সার, ডায়ালিসিস, থ্যালাসেমিয়া নিয়েও লড়ছেন। জীবনের জন্য লড়াই। যারা দারিদ্র্য, ক্ষুধা, বঞ্চনা নিয়েও জাপটে ধরে আছেন জীবনকে। শিখিয়ে দিচ্ছেন মরার আগে না মরার কাহিনী। তাঁরাই আসল হিরো।

না সুশান্ত, আপনি সিনেমার হিরো হয়েই রয়ে গেলেন, বাস্তবের হিরো হতে পারলেন না। যে জীবন ছেড়ে পালিয়ে গেলেন,সেই জীবন যে অনেক সুন্দর। দুঃখ, হতাশা, যন্ত্রণা আছে, কিন্তু তার পরেও অনেক প্রাপ্তি ছড়ানো থাকে জীবন জুড়ে। আপনার নাম খ্যাতি অর্থ রূপ প্রতিভা সব ছিলো, কিন্তু সেসব দেখার মতো চোখ ছিলো না,তাই হেরে গেলেন। সব কিছু সাজানো থাকে না, সাজিয়ে নিতে হয়।চরম সংকটে দাঁত চেপে মোকাবিলা করতে হয়। যারা পারেন, তারাই নায়ক।

আপনি শুধু নিজে হারলেন না, হারিয়ে দিয়ে গেলেন আপনার ফ্যানদের, হারিয়ে দিয়ে গেলেন আপনার ইন্ডাস্ট্রিকে। যারা সুশান্ত সিং রাজপুত হতে চাইতো,আপনার ভিডিও দেখে ফিটনেস জিম করতো,তারা আর চাইবে না পরাজিত নায়ক হতে। পরাজিতদের যে মনে রাখে না কেউ।ঘুমাও রাজপুত। পৃথিবী এগিয়ে চললো তোমায় ছাড়াই। 

আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়। এতে জীবনের অপ্রাপ্তি পূর্ন হয়না, বরং ফেলে রেখে যেতে হয় প্রাপ্তি গুলোকে। তাকিয়ে দেখলে সেগুলোর মূল্য কিন্তু কিছু কম ছিলো না। কাল থেকে আবার ফুল ফুটবে, গান,আনন্দ, হুল্লোড় সব চলবে।কারোর কিস্যু এসে যাবে না। শুধু এক পরাজিত নায়ক চলে গেলেন অতীতের পাতায়। বড়ই হতাশার এই  মৃত্যু। শান্তিতে থেকো সুশান্ত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ